সাধারণ
নাম : পানি কচু
বর্ণনা
: গন- Monochoria বলতে বুঝায় এই গনের উদ্ভিদ ১িট বিচ্ছিন্ন পুংকেশন বহন
করে।
প্রজাতি
: M. vaginalis - অর্ধজলীয় (উদ্ভিদের মূল কাদার মধ্যে জন্মায় এবং
ইহার
উপরের অংশ পানির উপরে বিদ্যমান থাকে), একবর্ষজীবি অথবা বহুবর্ষজীবি বিরুত,
১০-৫০
সে.মি. লম্বা হয়ে থাকে। ইহা মাংসল, রোমশ এবং চকচকে প্রকৃতির হয়ে থাকে।
লম্বা
বৃন্তযুক্ত পাতা ক্ষুদ্র রইজোম হতে উত্পন্ন হয়, পাতার আকার বিভিন্ন
রকমের,
বল্লমাকার থেকে হৃদয়াকৃতির অথবা ধনুকাকার (sagittate) হতে পারে।
পুষ্পমঞ্জুরীটি পুস্পপত্রকের বিপরীত দিকে প্রায় ৩০ সে.মি. লম্বা বৃন্ত (strike)নীল
হতে ঈষত্ নীল ফুল বহন করে। ফুল আসার পরে পুষ্পমঞ্জুরীটি নীচের দিকে বেকে
গিয়ে
পানির ভিতরে প্রবেশ করে এবং পানির নীচে ফল (capsule)পরিপক্কতা লাভ করে।
বয়স্ক গাছ
প্রায় বড় স্তুপের তৈরি করে।
জীবনবৃত্তান্ত
:
M.
vaginalis এর জীবন বৃত্তান্ত খুব কমই জানা গেছে। Noda এবং
Enguchi, 1965 সালে জাপানে ইহার জীবন বৃত্তান্ত কম্পর্কে খুবই সাহায্যকারী
কাজ
করেছেন। আগাম, সাধারণ এবং নাবী ধান রোপনের সময় তারা চারা গজানো সম্পর্কে
গবেষণা
করেছেন। ঋতু পরিবর্তনের ফলে অংকুরোদগম এবং মৃত্তিকা - আদ্রর্তার উপর ইহার
প্রভাব
সম্পর্কে তারা আরো গবেষণা করেছেন। সবচেয়ে বেশী চারা গজিয়েছে আগাম ধান
লাগানো
জমিতে। আগাম ধান লাগানো জমিতে যেখানকার মাটি নিমজ্জিত বা শুষ্ক তার
তুলনায়
সম্পৃক্ত মাটিতে শতকরা ৩৫ ভাগ চারা বেশী জন্মে। নিমজ্জিত অবস্থায়
অংকুরোদগমের
ক্ষেত্রে লক্ষনীয় খুব কম সময়ের মধ্যে গজায়, ১৫ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে সবচেয়ে
বেশী
চারা গজায়, যেখানে সম্পৃক্ত বা শুষ্ক মাটির ক্ষেত্রে সারা মৌসুম ব্যাপী
ক্রমান্বয়ে
চারা গজাতে দেখা যায়। অন্যান্য গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী জানা যায় যে,
পরাগায়নের পরে
ফল নিমজ্জিত হলে তা বীজ উত্পাদনের জন্য খুবই উপকারী।
বাস্তবিদ্যা
এবং বিস্তৃতি :
M.
vaginalis গ্রীষ্মমন্ডলীয়
এশিয়া থেকে আফ্রিকা পর্যন্ত কোথায়
ইহা আগাছা নয়। পরিষ্কারভাবে ইহা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার জন্য মারাত্বক আগাছা।
যদিও
ইহা গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চল থেকে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল পর্যন্ত ব্যাপকভাবে
বিস্তৃত।
ইহা কোরিয়া এবং জাপান থেকে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত
বিস্তৃত।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মুল-ভূখন্ড এবং ভারত পর্যন্ত ইহার বিস্তৃতি পরিলক্ষিত
হয়।
ইহাকে স্যাতসেতে জায়গায়, স্বাদু পানিতে, কর্দমাক্ত মাটিতে, খাল-বিলের তীরে
এবং
ধানের জমিতে দেখা যায়। ইহা একবর্ষজীবি প্লাবিত ধানের জমিতে বেচে থাকতে
পারে, সারা
বছর যথন জমি শুকিয়ে যায় এবং পুনরায় বীজ থেকে জন্মায়।
অপকারীতা
:
ইহা
পূর্ব এবং দক্ষিণ পূবৃ এশিয়ার ধানের জমিতে খুব মারাত্বক ক্ষতিকারক আগাছা
হিসাবে
পরিগণিত হয়। ভারতে ইহা ধানের একটি সাধারণ আগাছা হিসেবে গণ্য করা হয়। M.
vaginalis
আলোর জন্য তেমন প্রতিযোগিতা করে না কারন ইহার মূল অগভীর প্রকৃতির। গভীর
মূলীয় ধান
গাছ স্বাচ্ছন্দের সাথে পুষ্টি উপাদানের জন্য প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম।
আগাছা
ব্যবস্থাপনা :
জৈবিক
দমন :M. vaginalis এর প্রকৃতি শত্রু সম্পর্কে খুব কম পরিমাণ ধারনা
পাওয়া
যায়, কীটপতঙ্গের মধ্যে Geonula qunctiforw (Osthoptora orer),
Spodopfsa
litura, Nymphula fregonalis, এবং
Hippolia echeclus (Lepidoptra order) সব গুলোই সর্বভুক - এদেরকে
ভারতে দেখা
যায়।
রাসায়নিক
দমন :২-৪ ডি ঔষধটি হেক্টর প্রতি ৫০০ গ্রাম করে চারা গজানোর পরে প্রয়োগ
করতে হয়।
জাপানে সম্পন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে মৌসুমের শুরুতে আগাছানাশক কোন কাজে
আসেনা।
উদ্ভিদতত্ত্ব
:
স্বভাব
: মসৃণ, গুচ্ছ, জলজ বীরুত্ যার একটি ছোট মৌলকন্দ আছে যা ১০-৫০ সে.মি.
পর্যন্ত
লম্বা হয়। বন্যাপ্লাবিত ধান ফসলে বর্ষজীবী বা স্বল্পবর্ষজীবী এবঙ দীর্ঘ
প্লাবিত
ক্ষেত বহুবর্ষী হিসাবে বেচে থাকে। বয়ষ্ক আগাছাগুলো মাথা সৃষ্টি করে
কিন্তু এরা
অসংযুক্ত।
মূল :
বৃন্তের গোড়ায় গুচ্ছ মূল।
কান্ড
: খুব ছোট মৌলকান্ড, অশাখান্বিত।
পাতা :
পাতা বহুরুপকর, ২-১২.৫ সে.মি. লম্বা, ০.৫-১০ সে.মি. চওড়া। কচি পাতার
ফলকবিহীন,
বয়স্ক পাতা সরলরৈখিক ও চওড়া, ফলক বল্লমাকার, ডিম্বাকার, সুক্ষ, দীর্ঘাগ্র,
গোড়া
বৃক্কাকার অথবা গোলাকার, উজ্জল, গাঢ় সবুজ, দীর্ঘ শীরা, বোটা নরম, ফাকা
যা,
গোড়ার মুকুল থেকে বের হয়। লীফ সীথ গোড়ায় পেচানো লালচে (কচি অবস্থায়)
মুকুট
বুলবস (bulbous)।
পুষ্পমঞ্জুরী
: স্পাইকের মত, গোড়া, পুষ্পসীথ বিপরীতমূখী, সাথে বড় মঞ্জুরীপত্রযুক্ত যা
একগুচ্ছ
মোট বৃতি থেকে উত্পন্ন এবং ইহা বৃন্তের গোড়া থেকে দুই তৃতীয়াংশ উপর
থেকে।
৩-২৫টি ফুল একসঙ্গে প্রস্পুটিত; পুষ্পবৃন্দ ৪-২৫ মি.মি. লম্বা, পুষ্পপট
১১-১৫
মি.মি. লম্বা, ৬টি পাপড়ি ভায়োলেট বা ঈষত্ নীল, ৬িট পুংকেশর, লম্বা,
গর্ভদন্ডযুক্ত গর্ভাশয়। ফুল ধরার র পুষপ মঞ্জুরী নিম্মত।
ফল :
ক্যাপসিওল, ১ সে.মি. ব্যাস, ৩ ভাগে বিভক্ত, পানির নীচেও ফল পরিপক্ক হয়।
বীজ :
অসংখ বীজ লম্বালম্বিভাবে খাজযুক্ত।
চারা :
মূলের পার্পল রং থেকে সহজেই চারা চেনা যায়।