বাংলা নাম : বিন্যাচালা, চাপড়া, গৈচা,
মেলাঙ্গাকুড়ি, মেলানকুড়ি
বর্ণনা : Goose grass ঘনভাবে এবং গুচ্ছাকারে
জন্মানো একটি বর্ষজীবি আগাছা। এর মূল খুবই শক্তিশালী ও গভীরে যায়। পাতা
প্রশস্ত
ভাজকরা, ফ্লাটের মতো সাজানো। পাতাগুলো কাম বরাবর উঠানো। পত্র খোল
ছড়ানো এবং
কিনারা লোমযুক্ত। পুষ্পমঞ্জুরী ৪-৫টি পাইক দ্বারা গঠিত। যা অনেকটা হালকা
সবুজ,
কামের প্রান্ত থেকে অসমভাবে উত্পন্ন হয়। স্পাইকলেট ৩-৪টি ফুল নিয়ে গঠিত,
স্পাইক
অক্ষের নীচে মুখে সজ্জিত।
জীবনবৃত্তান্ত : Goose grass একটি বর্ষজীবি উদ্ভিদ,
এটা একমাত্র বীজ দ্বারা বংশবিস্তার করে। ইহা উষন অঞ্চলে জন্মায় এবং
পর্যাপ্ত আর্দ্রতা
পেলেই সব মোসুমেই ফলবে।।
পরিবেশ এবং বিস্তৃতি : এই আগাছার জন্ম আফ্রিকায় এবং
পরবর্তীতে আফ্রিকা, এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকাসহ
উঞ্ষমন্ডল এবং
নাতিশীতোষ্ণ মন্ডলে বিস্তার লাভ করে। এর বিস্তৃতি ব্যাপক, ৩৩০০ কি.মি.
পূর্ব থেকে
পশ্চিমে এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে। এই আগাছা আলো পছন্দ করে এবং উষ্ণ এবং
আর্দ্র
অঞ্চলের ফসলের একটি প্রধান আগাছা হিসেবে বিবেচিত। এই আগাছা প্রধানত কর্দম
থেকে
বেলে কর্দম মাটি সুনিষ্কাশিত এবং শক্ত মাটিতে জন্মে। উন্মুক্ত মাটিতে এদের
প্রচুর
জন্মাতে দেখা যায়। লন এবং পায়ে চলার পথে এদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
ময়লাযুক্ত
স্থান, রাস্তার পাশ এবং বায়ুচলাচলযুক্ত মাটিতে এদের জন্মাতে দেখা যায়।
বদ্ধ
জলাভূমি, সেচযুক্ত জমির আইল এবং ক্যানেলে এদের ব্যাপকভাবে দেখা যায়।
ক্ষতিকর বৈশিস্ট : উষ্ণমন্ডলে কৃষি জমিতে এ আগাছা
একটি ব্যাপক সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে। ভারতে উচ্চ জমির ধান, তুলা এবং শাকসবজির
ক্ষেতে
এদের প্রচুর দেখা যায়।
আগাছা ব্যবস্থাপনা :
জৈবিক : প্রাকৃতিক শত্রু পোকা এই আগাছা দমনে
ব্যবহার করা যায়। ভারতে Finger millet ৫০ এর অধিক পোকা, নেমাটোড,
ছত্রাক,
ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত
হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
রাসায়নিক প্রয়োগ : ভারতে 2, 4 – D@ 500 g/ha
অংকুরপূর্বক প্রয়োগ অথবা butachlor @ 1.5 kg a.I/ha, Anilophos @ 400
g/ha, @
Pretilachlor @ 1.0 kg/ha প্রয়াগ করে আগাছা দমন করা হয় ।
পাকিস্তানে গ্রীষ্মকালীন ফসলে Atrazine (Aatrex),
Diuron (Karmex), Metolachlor (Dual gold) অথবা pendimethalin (stomp)
পূর্ব
অংকুরোদগম প্রয়োগ করে এ আগাছা সম্পূর্ণ দমন করা হয়েছ।
উদ্ভিদ সংক্রান্ত তথ্য :
স্বভাব : এটা একটি ঘনভাবে, গুচ্ছাকারে জন্তানো
বর্ষজীবি গুল্ম যা ৪০-১০০ সে. মি. লম্বা হয় ।
মূল : শক্তিশালী এবং গভীর, গুচ্ছাকার।
কান্ড : কাম শক্তভাবে সংকুচিত, ২-৫ মি. মি.
প্রশস্ত, নরম এবং লোমশ। প্রথমে অশাখান্বিত থাকে পরে দ্রুত বেড়ে ওঠে।
(Node) পর্ব
সন্ধি গাঢ় এবং লোমশহীন, নীচের গুলো প্রায়শই মূলযুক্ত ।
পাতা : পাতা একটার পর একটা জন্মায়। পত্রখোল ভাজকরা
এবং লোমশহীন। লিগিউল খুব ছোট (১ মি. মি. লম্বা)। পত্রফলক ১০-৩৫ মি. মি.
লম্বা
এবং ৩-১০ মি.মি. প্রস্থ, রৈখিক, গোড়ায় ভাজ করা এবং চুড়ার দিকে ছড়ানো।
সাধারণত
লোমশহীন কিনতু উপরের তলায লম্বা লোম দেখা যায়। মধ্য শীরা উঠানো।
পুষ্পমঞ্জরী : ২-১০টি পরপর সাজানো, রৈখিক ৩-১৫
সে.মি. লম্বা এবং ৩-৭ মি.মি. প্রস্থ। স্পাইকলেট ৩-৯ পুস্প বিশিষ্ট,
অবৃন্তক,
rachis এর নিম্নতলে ২ সারিতে সাজানো। তারা ফ্যান আকৃতিতে ছড়ানো ৪-৮ মি.
মি.
লম্বা এবং ৩-৬ মি. মি. প্রস্থ। নীচের গ্লুম ১-৩ মি. মি. লম্বা এবং উপরের
গ্লুম
২.৫-৫ মি. মি. লম্বা, ঝিল্লীযুক্ত । Palia ঝিল্লী যুক্ত, Lemmas এর চেয়ে
ছোট এবং
অনেকটা সরু ।
ফল : Caryopsis
বীজ : ডিম্বাকৃতি, লালচে বাদামী থেকে কালো, ১-১৫
মি. মি. লম্বা আড়াআড়িভাবে কুঞ্চিত।
চারা : প্রথম পাতা ভাজযুক্ত। পাতাগুলি একটার পর
একটা সাজানো। পত্রফলক লম্বা থেকে রৈখিক, শীর্ষভাগ গোলাকার, ২-১০ মি. মি.
লম্বা
এবং ৫ মি. মি. প্রস্থ।